দিল্লির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক

Pinaki Das/Al Jazeera

দৈনিক নয়া দিগন্তে ফরহাদ মজহারের একটি মন্তব্য প্রতিবেদন পড়ছিলাম (২২ নভেম্বর ২০১১)। ফরহাদ মজহার বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও উল্লেখযোগ্য কবি। তার লেখা আমি সাধারণত বিশেষ মনোযোগ দিয়ে পড়ি। তার এই মন্তব্য প্রতিবেদনটিও আমি মনোযোগ দিয়েই পড়লাম। ভেবেছিলাম ফরহাদ মজহার এমন কিছু বলতে চাচ্ছেন, যা দেশবাসীকে একটা সুষ্ঠু কর্মপন্থা দিতে পারবে। কিন্তু লেখাটি পড়ে তেমন কোনো পন্থার নির্দেশ পাইনি । তিনি তার লেখায় দিল্লির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন। কিন্তু দেননি কোনো সুস্পষ্ট পন্থার নির্দেশ।

আমরা ভাটির দেশ। ভৌগোলিক দিক থেকে আমরা আমাদের দেশের প্রবহমান বেশির ভাগ নদীর পানির ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার কোনো ক্ষমতা রাখি না। ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়ে এসেছে ৫৪টি নদী। ভারত উজানের দেশ। ভারত এসব নদী থেকে সহজেই পানি নিয়ে নিতে পারছে। কিন্তু আমরা ভাটির দেশ। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে আমরা তা করতে পারছি না। ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো তাই আমাদের পক্ষে যথেষ্ট সহজসাধ্য নয়।

গঙ্গার পানি নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৯৬ সালে হয়েছিল একটা চুক্তি। ভাবা গিয়েছিল, এই চুক্তির ফলে আমরা পাব গঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহের উপযুক্ত অংশ। কিন্তু বাস্তবে তা হতে পারছে না। এই চুক্তিতে নেই কোনো গ্যারান্টি-ক্লজ। অর্থাৎ নেই পানি পাওয়ার নিশ্চয়তা। এই চুক্তি অনুসারে পানি না পেলে আন্তর্জাতিক কোনো ফোরামে বিচারের দাবি নিয়ে বাংলাদেশের যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি। যখন চুক্তিটি করা হয়েছিল তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি ভারতকে বিশ্বাস করেছিলেন সাদা মনে। যেটা করা উচিত হয়নি। কিন্তু তথাপি একটা চুক্তি করা সম্ভব হয়েছিল। আর এর ফলে গঙ্গা নদীর পানি পাওয়ার অধিকার বাংলাদেশ রাখে, এ স্বীকৃতি পেয়েছিল।

এক সময় ভারত বলত, গঙ্গা মূলত ভারতের নদী। এর পানিতে বাংলাদেশের কোনো অধিকার নেই। কিন্তু ভারতের এই যুক্তি ১৯৯৬ সালের দেবগৌড়া- হাসিনা চুক্তির ফলে আর গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে না। এটা একটা সাফল্য। কিন্তু এ সত্ত্বেও বলতে হয় বাস্তব অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন ঘটেনি। আমরা গঙ্গার পানির প্রাপ্য অংশ পাচ্ছি না। আর এর জন্য আমরা ভারতের কাছে উঠাতে পারছি না শক্ত দাবি।

ভারতের সাথে তিস্টার পানি নিয়ে বাংলাদেশের যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে তা যে সহজে মিটবে, তেমনটি মনে হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিস্টার পানি যথাযথভাবে আসছে না। তিস্তা নদীর উদ্ভব হয়েছে সিকিমে। সিকিম নিয়ে নিচ্ছে তিস্তা নদীর পানি। পশ্চিমবঙ্গে তিস্তা নদীতে আগের মতো পানি আর আসছে না। বাংলাদেশকে তিস্টার পানি দিলে পশ্চিমবঙ্গ তাই পড়বে পানিসঙ্কটে।

মনে হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু বাস্তবতাকে রাখতে চাচ্ছেন ঢেকে। পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার গজলডোবায় যে ব্যারাজ নির্মিত হয়েছে, তাতে বিশেষভাবে আটকা পড়ছে তিস্তার পানি। আর এই ব্যারাজের জন্যই বাংলাদেশ পাচ্ছে না তিস্তার পানি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিকিমকে দোষারোপ করছেন। কিন্তু সিকিম তিস্তা থেকে কতটা পানি নিয়ে নিচ্ছে বলে তিস্তায় পানি আসছে না, সে সম্বন্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকছেন নীরব।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মাত্র। অথচ আমরা দেখছি, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে দেনদরবার করছেন তিস্তার পানি পাওয়ার জন্য। এটা রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্য নিশ্চয়ই অবমাননাকর। আমাদের চুক্তি হতে পারে শুধু ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে; পশ্চিমবঙ্গের সাথে নয়। সারা ভারতে বিভিন্ন প্রদেশের মধ্যে নদীর পানি নিয়ে শুরু হয়েছে গোলযোগ। দক্ষিণ ভারতে কৃষ্ণা নদীর পানি নিয়ে বিবাদ চলছে তামিলনাড়ু, কর্নাটক ও অন্ধ্র প্রদেশের মধ্যে। বিবাদ চলছে নর্মদা নদীর পানি নিয়ে। পানির বিভাজন সম্পর্কে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছেন, তাতেও বাস্তবে মিটতে পারছে না নদীর পানি নিয়ে বিরোধ। কিন্তু আমরা এতে কোনো অংশ নিতে পারি না। আমরা ভারত সরকারের কাছে দাবি উঠাতে পারি অভিন্ন নদীর পানি পাওয়ার জন্য। আমরা এর জন্য কোনো প্রাদেশিক সরকারের মন্ত্রী অথবা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়ে দেনদরবার করার যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পানির ব্যাপারে যেতে পারছেন, সেটা আমাদের কাছে আদৌ স্বচ্ছ নয়।

বরাক নদীর উদ্ভব হয়েছে নাগা-মনিপুর জলপ্রপাত থেকে। টিপাই একটি নদীর নাম। টিপাই নদী এসে পড়েছে বরাক নদীতে। টিপাই ও বরাক নদীর সংযোগস্থলের কাছে হলো টিপাইমুখ নামের গ্রাম। এই গ্রামের কাছে বরাক নদীর ওপর পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ভারত এখন নির্মাণ করতে যাচ্ছে বিশেষ ড্যাম। ব্যারাজ ও ড্যাম শব্দ দু’টি আমাদের অনেকের কাছে যথেষ্ট স্পষ্ট নয়। ব্যারাজ বলতে বোঝায় কোনো নদীতে কংক্রিট অথবা রি-ইনফোর্সড কংক্রিট দিয়ে আড়াআড়িভাবে বাঁধ নির্মাণ। এই বাঁধের মধ্যে থাকে অনেকগুলো পানি-কপাট বা স্লুইসগেট। এসব পানি-কপাটকে ইচ্ছামতো খোলা ও বন্ধ করা চলে। এদের খুলে ও বন্ধ করে ব্যারাজের মধ্য দিয়ে নদীর পানিপ্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে ১১ মাইল দূরে গঙ্গা নদীর ওপর ভারত যে ফারাক্কা ব্যারাজ নির্মাণ করেছে, তাতে আছে ১১৫টি পানি-কপাট; যার প্রত্যেকটি ৬০ ফুট প্রশস্ত ও ২১ ফুটের মতো উঁচু।

ড্যাম বলতে বোঝায় নদীর ওপর সাধারণ ব্যারাজের তুলনায় নির্মিত উঁচু ব্যারাজকে। ড্যাম গড়লে তার এক দিকে নদীর পানি আটকে সৃষ্টি হয় কৃত্রিম হ্রদ। এই হ্রদের পানিকে বিশেষভাবে প্রবাহিত করে উৎপন্ন করা যায় ডায়নামাতে বিদ্যুৎ। একে আমরা সাধারণ কথায় বলে থাকি পানিবিদ্যুৎ। ড্যামের পানি ব্যবহার করা হয় টারবাইন বা বিশেষ ধরনের চাকা ঘোরাতে; যা ঘোরায় ডায়নামার ভেতরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কলকব্জাকে। এভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য খরচ পড়ে অনেক; যা উঠে আসতে প্রয়োজন হয় দীর্ঘ সময়ের। অন্য দিকে কৃত্রিম হ্রদের মধ্যে জমতে থাকে পলিমাটি। হ্রদের মধ্যে পলিমাটি জমে হ্রদ ভরাট হয়ে যেতে পারে। ফলে একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বিদ্যুৎ উৎপাদন। বাংলাদেশে কর্ণফুলী নদীর ওপর ড্যাম তৈরি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ১৯৬২ সালে। কর্ণফুলী ড্যামের জন্য সৃষ্টি হয় কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদের। কাপ্তাই হ্রদের ক্ষেত্রফল হচ্ছে ১৭২২ বর্গকিলোমিটার। তবে এর আশপাশে আরো প্রায় ৭৭৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা পানিতে প্লাবিত হতে পারে। কাপ্তাই হ্রদের উদ্ভবের ফলে আনুমানিক ১৮ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৫৪ হাজার একর কৃষিভূমি তলিয়ে যায় হ্রদের পানিতে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬৯০ বর্গকিলোমিটার বনভূমি। কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যয়ভার বহন করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এই পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছিল দু’টি মার্কিন কোম্পানি। কর্ণফুলী নদীর উদ্ভব হয়েছে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের লুসাই পাহাড়ে। কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভারত কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

কিন্তু বরাক নদীর ওপর ড্যাম নির্মাণ করলে বরাক নদীর পানিপ্রবাহ কমে যাবে। বাংলাদেশ কোনোভাবেই আর পাবে না আগের মতো বরাক নদীর পানি। বরাক নদী সিলেট জেলায় প্রবেশ করার ঠিক পরে দু’টি শাখায় বিভক্ত হয়েছে। যার একটির নাম সুরমা। আর অপরটির নাম কুশিয়ারা। এ দু’টি নদীর মিলিত পানি হলো মেঘনা নদীর পানির মূল উৎস। বরাক নদীতে আগের মতো আর পানি না এলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদী শুকিয়ে যেতে চাইবে। বিপন্ন হবে মেঘনা নদীর অস্তিত্ব। আমাদের পানিপ্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান ক’দিন আগে বলেছেন, টিপাইমুখ বাঁধ ভারতের অভ্যন্তরীন ব্যাপার। এই নিয়ে বাংলাদেশের কোনো বক্তব্য থাকতে পারে না। কিন্তু ড্যাম তৈরি হচ্ছে বরাক নদীর ওপর। বরাক নদীর ওপর আছে বাংলাদেশেরও অধিকার। বরাক নদীর প্রবাহ সেভাবে কমে গেলে বাংলাদেশের মানুষ বিশেষভাবেই হবে ক্ষতিগ্রস্ত। মাহবুবুর রহমান কী করে বলতে পারেন, বরাক নদীর ওপর ভারত যে ড্যাম নির্মাণ করতে যাচ্ছে তাতে বাংলাদেশের কোনো বক্তব্য থাকা উচিত নয়; সেটা আমাদের কাছে মোটেও বোধগম্য নয়।

১৯৫১ সালে ভারত ফারাক্কা ব্যারাজ নির্মাণের পরিকল্পনা করে। সাবেক পাকিস্তান সরকার করেছিল এর তীব্র প্রতিবাদ। ভারত সরকার বলেছিল, ফারাক্কা ব্যারাজ নির্মাণের কারণে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু আমরা এখন উপলব্ধি করতে পারছি, ভারত যা বলেছিল তা ছিল সর্বৈব মিথ্যা। এখন সে টিপাইমুখ ড্যাম নির্মাণের জন্য যা বলছে তাকেও তাই সত্য বলে মেনে নেয়া সঙ্গত হবে না। আমাদের উচিত হবে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে জাতীয় নীতিনির্ধারণ করা। ভারত সত্য কথা বলে না, এ কথা এখন স্বতঃসিদ্ধ হয়েই উঠেছে।

আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলছেন, তিনি নাকি ভারতের কাছ থেকে বিশেষ আশ্বাস পেয়েছেন। জেনেছেন, টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশের কোনো ক্ষতির কারণ হবে না। তার কথা শুনে মনে হচ্ছে, তিনি হয়ে উঠেছেন ভারতীয় স্বার্থেরই প্রবক্তা; বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিনি নন। দীপু মনিকে আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাচ্ছে না এ দেশের মানুষ। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সম্পূর্ণ অযোগ্য।

দুই বছর আগে শোনা গিয়েছিল, চীন তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ব্যারাজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের তিব্বতি নাম হলো সাং-পো (Tsang-Po)। ব্রহ্মপুত্র নদের মোট দৈর্ঘ্য ২৬৭০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। ভারতের মধ্যে তার যে অংশটুকু পড়েছে তার দৈর্ঘ্য হলো ৮০২ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি তিব্বতে। তার প্রথম ১৪৪৩ কিলোমিটার অংশ প্রবাহিত হয়েছে তিব্বতের মধ্য দিয়ে। ব্রহ্মপুত্র নদকে তাই বলা যায় মূলত তিব্বত তথা চীনের নদী। চীন সাং-পো নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করতে যাচ্ছে, এই খবর জ্ঞাত হওয়ার পর ভারত চীনের কাছে জানিয়েছিল তীব্র প্রতিবাদ। পত্রিকার খবরে প্রকাশ, চীন ভারতকে জানিয়েছিল, সে সাং-পো নদীর ওপর কোনো ব্যারাজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে না। এ ধরনের কিছু করার আগে সে ভারতকে আন্তর্জাতিক প্রথানুসারে সব তথ্য সরবরাহ করবে।

ভারত একতরফাভাবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রিত করছে। মানছে না কোনো আন্তর্জাতিক প্রথা (Convention)। আর সে এটা মানছে না বলেই বাংলাদেশের সাথে হতে পারছে নদীর পানি নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত বিরোধ। নদীর পানি নিয়ে এক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল মেক্সিকোর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডা ও মেক্সিকোর সাথে নদীর বিরোধ মিটিয়ে ফেলেছে আন্তর্জাতিক প্রথা মেনে নিয়ে। একইভাবে ভারত যদি আন্তর্জাতিক প্রথাকে মেনে নেয়, তবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পানি নিয়ে যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে এবং বাড়ছে, তার নিষ্পত্তি হতে পারবে।

আমাদের দেশে নদী নিয়ে এখনো খুব একটা গবেষণা হয়নি। ১৯৬৩ সালে একজন মার্কিন বিশেষজ্ঞ তার একটি লেখায় বলেছিলেন, তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে যে পরিমাণ পানি নদীপথে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়ে, তার হিসাব হলো এক শ’ কোটি একর ফিট। এই পানি যদি ঠিকমতো ব্যবহার করা যায়, তবে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ই তাদের কৃষি উৎপাদন বিপুলভাবে বাড়াতে পারবে। (Roger Revelle : Water, in Technology and Economic Development; A Scientific American Book; PP, 72-90)।

বাংলাদেশ- ভারত নদীর পানি নিয়ে বিবাদ হওয়া উচিত নয়। ভারত-বাংলাদেশ নদীর পানি ব্যবহারে সহযোগিতা করতে পারে। যার মাধ্যমে উভয় দেশই হতে পারে বিশেষভাবে উপকৃত।

খালেদা জিয়া ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের আগে বাংলাদেশ-ভারত মিলে যৌথ জরিপের। যার মাধ্যমে বোঝা যাবে টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে কি না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যদি খালেদা জিয়ার প্রস্তাবে সাড়া দেন, তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে বিরাট আস্থার ঘাটতি দেখা দিয়েছে তা কমে আসতে পারবে।

Like this article?

Leave a comment

জনপ্রিয় লেখাসমূহ

জনপ্রিয় বিভাগসমূহ