(এই প্রবন্ধটি প্রখ্যাত সাংবাদিক মাসুদ মজুমদার সম্পাদিত ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও রক্তাক্ত আফগান’ নামক সংকলিত কিতাবে প্রথম প্রকাশিত হয়। কিতাবটি প্রকাশিত হয় নভেম্বর, ২০০২ তে)
আজকের আফগানিস্তানের সীমানা ইংরেজের সৃষ্টি। ইংরেজৱাই প্রথম আফগানিস্তানকে একটি বাফাৱ(Buffer) রাজ্য হিসেবে গঠন করে। রাশিয়ার এই অগ্রগতিকে ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রতিরোধের লক্ষ্যে ইংরাজ সৃষ্টি করে আজকের আফগানিস্তান। মুঘল আমলে আফগানিস্তান একটা আলাদা রাজ্য ছিল না। ছিল মুঘল সাম্ৱাজ্যেরই অংশ। ইংরাজ শাসনামলে আফগানিস্তান পায় তার বর্তমান স্বাতন্ত্র্য। একটা পৃথক রাজ্য হিসেবে।
আফগানিস্তান এক ভাষাভাষী মানুষের রাজ্য নয়। তিনটি ভাষায় চলে আফগানিস্তানে। পশতু, ফারসী আৱ এক প্রকার তুর্কী। এই তুর্কি আর ফারসী ভাষা বলে প্রধানত উত্তরে। ফার্সি তাজিকদের ভাষা। এছাড়া আফগান সম্ভ্রান্ত পরিবারেরও ভাষা।
আফগানিস্তানের শাসকরা ফারসী ভাষার মাধ্যমেই চালিয়েছে শাসনকার্য। যেমন শাসনকার্য চালিয়েছেন, মুঘল সম্ৱাটৱা ফাৱসী ভাষাৱ মাধ্যমে এই উপমহাদেশে। যে “নর্দান- অ্যালায়েন্সে” এর কথা এখন আমরা যথেষ্ট শুনছি, তা মূলত ফারসী ভাষী তাজিক এবং তুর্কী ভাষী তুর্কমেন দের নিয়ে গঠিত। আফগানিস্তানের প্রধান জনগোষ্ঠী হলো পশতু ভাষী পাঠান। পাঠানরা বাস করে দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানে। পাঠানৱা বাস করে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশেও। অর্থাৎ পাঠানরা ভাগ হয়ে আছে দু’টি রাষ্ট্রের মধ্যে। আজকের পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে সীমারেখাকে বলে ডুরান্ড লাইন(DURAND LINE) যা রচিত হয় ১৮৯২ খৃস্টাব্দে। যে নির্বাচিত রাজা জহির শাহ কে (জন্ম ১৯১৪) রোম থেকে ফিরিয়ে এনে এখন আফগানিস্তানের সমস্যা সমাধানের কথা অনেকে বলছেন, তিনি ১৯৬০ এর দশকে তোলেন পাকতুনিস্তানের দাবি। তিনি মানতে চান না ডুরান্ড রেখাকে পাক-সীমান্ত হিসাবে।
এখন তালেবানদের দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে “নর্দান-অ্যালায়েন্স” এর সাহায্যে। কিন্তু উত্তরের তাজিক এবং তুর্কমেনদের সাথে পাঠানদের সম্বন্ধ বহুকাল থেকেই ভালো নয়। “নর্দান-অ্যালায়েন্স” অনিবার্যভাবেই সৃষ্টি করতে বাধ্য রাজনৈতিক জটিলতা। ইঙ্গো-মার্কিন নীতি তাই আফগানিস্থানে বাড়াতে যাচ্ছে আরো আরো সংঘাত। আর পাকিস্তান করছে ইঙ্গো-মার্কিন এই পরিকল্পনাৱ বিশেষ বিরোধিতা। পাকিস্তান কখনোই আফগানিস্তানে একটা পাকিস্তান বৈরী সরকারের প্রতিষ্ঠা কে মেনে নিতে পারে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন প্রথমে বলেছে,তাদের লক্ষ্য হলো সন্ত্রাস দমন। কিন্তু বর্তমানে মনে হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন চাচ্ছে আফগানিস্তানে তাদের একটি আজ্ঞাবহ সরকারের প্রতিষ্ঠা। আর সেটা করলে আফগানিস্থানে গৃহযুদ্ধ বন্ধ হবে না। চলতেই থাকবে। কারণ, কোন নর্দান অ্যালায়েন্স কর্তৃক পরিচালিত সরকার সহ্য করতে পারবেনা পাঠানরা।
আজকের বিশ্ব রাজনীতিতে পেট্রোলিয়াম একটি বিশেষ বিবেচ্য বিষয়। সমস্ত উত্তর আফগানিস্তানের মাটির নিচের পেট্রোলিয়াম আছে। আফগানিস্তানের এই তেল তুলবার জন্য ভবিষ্যতে মার্কিন কোম্পানিরা চাইতে পারে পুঁজি বিনিয়োগ করতে। অর্থাৎ, যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে, কেবলমাত্র দমনই তার লক্ষ্য, কিন্তু বাস্তবে আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ায় মার্কিন পুঁজিপতিদের দৃষ্টি পড়ছে তেলের জন্য। অর্থাৎ, কেউ বলতে পারে না শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কি দাঁড়াবে। সন্ত্রাস ধ্বংসের নামে হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে এই অঞ্চলে আপন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা। তেল তার অন্তিম লক্ষ্য। কেবলমাত্র আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে মার্কিন শাসকগোষ্ঠী আফগানিস্তানে যুদ্ধের ঝুঁকি নিতে যাচ্ছে, এমন ভাবার কোন কারণ নেই। এরমধ্যে হতে পারে কাজ করছে এক দূরপ্রসারী পরিকল্পনা। তাই মার্কিন নীতি বিচারের সময়, কেবলমাত্র সন্ত্রাস দমনকেই একমাত্র বিচার্য বলা যায় না। যদিও সেটাকেই এখন একমাত্র লক্ষ্য হিসেবে তুলে ধরবার জোর চেষ্টা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বৃটেনের পক্ষ হতে। বৃটেনের অবশ্য অন্য উদ্দেশ্যও আছে। বৃটেনের ছিল বিরাট সাম্রাজ্য। এই সাম্রাজ্য হারানোর বেদনা এখনো সরে যায়নি তার মন থেকে। বৃটেনে চাচ্ছে, মার্কিন সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বে তার সাবেক কর্তৃত্বের কিছুটা ফিরে পেতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সে তাই দিচ্ছে সক্রিয় সমর্থন। এর পশ্চাতে কাজ করছে তার সেই সাবেক সম্রাজ্যবাদী চেতনা। কেবলই ‘সন্ত্রাস’ দমনের উদ্দেশ্য নয়। সন্ত্রাসীরা এ পর্যন্ত বৃটেনের উপর কোনো হামলাই করেনি। কিন্তু বৃটেন দিচ্ছে বর্তমান আফগান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভূমিকা। মনে হয়, এ ব্যাপারে ইংরেজী ভাষাভাষী বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্র যেন একটি দেশে পরিণত হয়ে পড়েছে। আফগানিস্তানে কেবল যুদ্ধ শুরু। কেউ বলতে পারে না এই যুদ্ধ কী রূপ নিতে যাচ্ছে। তবে অতীতে পাঠানদের হাতে আফগানিস্তানে পরাজিত হয়েছিল বৃটেন। আফগানিস্তান পাহাড়ী দেশ। শীতে সমস্ত উত্তরাঞ্চল জুড়ে যথেষ্ট বরফ পড়ে। প্রাকৃতিক কারনে এই অঞ্চলের যুদ্ধ করা সহজ নয়। আর ক’দিন পরই আফগানিস্তানের উত্তরে আরম্ভ হবে তুষার ঝরা। আফগানিস্তানের অধিকাংশটাই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০০ ফিট উঁচু। আফগানিস্তানের পর্বতমালা ১৫০০০ ফিট অথবা তার চেয়েও উঁচু। এই অঞ্চলে যুদ্ধে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনকে, যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে স্বীকার করতে হবে প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতি। ভিয়েতনামের চাইতেও অনেক কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে এখানে। যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে পাকিস্তান জুড়ে সৃষ্টি হতে পারে এক বিরাট রণক্ষেত্র। আফগানিস্তান আর পাকিস্তান, উভয় রাষ্ট্রেই আছে পাঠানদের বাস। পাঠানরা রণনিপুণ জাতি। এখন বিশ্বের সমস্ত মুসলিম অধ্যুষিত দেশে সৃষ্টি হচ্ছে আফগানিস্তানে মার্কিন হামলার বিরূপ প্রতিক্রিয়া। মালয়েশিয়ায় মাহাথির মোহাম্মদ করেছেন আফগানিস্তানে মার্কিন হামলার তীব্র সমালোচনা। যদিও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট মেঘবতী সুকর্ণপুত্রী প্রেসিডেন্ট বুশকে প্রদান করেছিলেন সাহায্যের বিশেষ প্রতিশ্রুতি, কিন্তু তিনি এখন তার দেশের জনমতের চাপে বলছেন ভিন্ন কথা। বিশ্ব রাজনীতিতে হতে যাচ্ছে বিশেষ মেরুকরণ। বাংলাদেশ সরকারকেও চলতে হবে সাবধানে। এদেশের মুসলিম মনেও জেগে উঠেছে মার্কিন বিরোধী প্রতিক্রিয়া। দেশের নতুন সরকারকে বুঝতে হবে এর স্বরূপ। কেবল মুসলিম বিশ্বের নয়, সারা বিশ্বেই উদারমনা ব্যক্তিরা প্রশ্ন তুলছেন মার্কিন নীতি নিয়ে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন,যারা তার নীতিতে সায় দেবেন না তারা সবাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু। তার এই উক্তির বাস্তব অর্থ হচ্ছে, বিশ্বের সব রাষ্ট্রকেই চলতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একক নির্দেশে। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য দেশ, একমাত্র বৃটেন ছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই কর্তৃত্ববাদী মনোভাবকে মেনে নিতে পারে না। বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানী।
জার্মানীর রাস্তায় বেরিয়েছে বিরাট যুদ্ধ বিরোধী মিছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজকের বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিমান ও সম্পদশালী রাষ্ট্র। পক্ষান্তরে আফগানিস্তান একটি দরিদ্রতম দেশ। সেই দেশের উপর শক্তি প্রয়োগ করে বুশ প্রশাসন যেভাবে উল্লাস প্রকাশ করেছেন, তা সত্যিই ঘৃণাবহ ব্যাপার। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেসব অস্ত্র ব্যবহার করছে, তা শিল্পসমৃদ্ধ দেশকে ধ্বংস করাবার ক্ষেত্রে যতটা কার্যকরী, আফগানিস্তানের মত দেশকে তা নয়। আফগানিস্তানে বড় শহর নেই। নেই কল-কারখানার অর্থনীতি। মানুষ সেই দেশে বাস করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। বোমা মেরে তাই তাদের উড়িয়ে দেয়া যাবে না। দেশটাকে জয় করতে হলে সৈন্য ঢোকাতে হবে। আকাশ থেকে নামাতে হবে ছত্রীসেনা (প্যারাট্রুপার)। অনুমান করা চলে, কাজটা খুব সহজ হবে না।
ইরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার স্থল ও আকাশ ব্যবহার করতে দিচ্ছে না।তাই তার মধ্য দিয়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর আসবার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। পক্ষান্তরে পাকিস্তান থেকে বোলাম, গোমাল এবং খাইবার গিরিপথ এর মধ্য দিয়ে সৈন্য এবং রসদ নেয়া সহজ নয়। একমাত্র ভরসা ”নর্দান অ্যালায়েন্স”। উত্তর থেকে আক্রমণ। আপাতত রাশিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু সেজেছে। চীনও বলছে সন্ত্রাসবাদ দমনের কথা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এরা কেউ চাইবেনা আফগানিস্তানে মার্কিন প্রতিপত্তি।এরা কেউই চাইতে পারেনা তাদের সীমান্তের ধারে মার্কিন উপস্থিতি। যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে, রুশ-চীন মনোভাব অনেকভাবে বদলে যেতে পারে।
তালেবানরা জেহাদ ঘোষণা করেছেন। তারা কঠোর ইসলামপন্থী। কিন্তু পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বামপন্থীদের একাংশ হয়ে উঠতে চাচ্ছেন যেন সহানুভূতি সম্পন্ন। কারণ তারা মনে করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূর্বল হবার অর্থ দাঁড়াবে বিশ্বে পুঁজিবাদের পরাজয়।ইউরোপে গণতান্ত্রিক বামরা মিছিল করছে মার্কিন আগ্রাসনের সমালোচনা করে। এমন কি কলিকাতার পথে সিপিএমকে মিছিল করতে দেখা গেল মার্কিন নীতির বিপক্ষে। আফগানিস্তানে মার্কিন হামলার সমর্থন করছেন না তারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ আর বিলাতে প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার বলছেন, তাদের যুদ্ধ ইসলামের বিপক্ষে নয়, কেবলমাত্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির সংক্রান্ত বিখ্যাত ‘Foreign Affairs ‘ নামক পত্রিকায় ১৯৯৩ সালের গ্রীষ্মকালীন সংখ্যায় “Clash of Civilizations “(সভ্যতার সংঘাত) নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। প্রবন্ধটি লেখেন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্যামুয়েল হ্যানিংটন। এতে তিনি প্রমাণ করতে চান বিশ্ব রাজনীতিতে এখন আর জাতি-রাষ্ট্রের প্রাধান্য থাকতে যাচ্ছে না। তা নিয়ন্ত্রিত হতে যাচ্ছে সভ্যতার সংঘাত এর দ্বারা। হানিংটন বর্তমান বিশ্বের মানবসমাজকে ৮টি সভ্যতায় বিভক্ত করেছেন। তিনি অভিমত প্রদান করেছেন,এই সভ্যতার মধ্যে আপাতত ইসলাম ও ইউরো-আমেরিকান সভ্যতার মধ্যে সংঘাত প্রাধান্য পেতে যাচ্ছে। নিকট ভবিষ্যতে এই সংঘাতকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হবে বিশ্ব রাজনীতি। হানিংটন এর এই থিসিসের উপর মন্তব্য করতে যেয়ে বিলাতের বিখ্যাত সাপ্তাহিক Economist পত্রিকায় ৬ আগস্ট ১৯৯৪ এর গ্রিষ্মকালীন সংখ্যায় বলা হয়, আমেরিকান সভ্যতা বলতে হানিংটন যা বোঝাতে চাচ্ছেন তার ভিত্তি হলো এক চূড়ান্ত ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী ধারণা। এখানে ব্যক্তিকে দেখার চেষ্টা চলেছে এক লাগামছাড়া স্বাধীনতা। অর্থনীতির ক্ষেত্রে যার তাৎপর্য হলো রাষ্ট্রীকনিয়ন্ত্রণবিহীন বাজার অর্থনীতি। কিন্তু ইসলাম চেয়েছে এবং চায় অর্থনীতির উপর সামাজিক নিয়ন্ত্রণ। এদিক থেকে বাম চিন্তার সঙ্গে আছে তার আদর্শিক মিল। তাই ইসলাম আর ইউরো-আমেরিকান সভ্যতার মধ্যে যদি সত্যিই তেমন কোন সংঘাত বাধে, তবে সারা বিশ্বে বামপন্থীদের একাংশের সমর্থন শেষ পর্যন্ত ঝুঁকে পড়বে ইসলামেরই প্রতি। তথাকথিত মুক্তবাজার গণতন্ত্রের দিকে নয়। বিশ্ব রাজনীতির ধারা যেন পেতে যাচ্ছে কতকটা এরকমই একটা ছক। আমরা এখন দেখছি, আফগানিস্তানে মার্কিন হামলার পর সারাবিশ্বে বাম রাজনীতিকদের এক অংশ সোচ্চার হয়ে উঠেছেন মার্কিন বিরোধিতায়। বুশ বলেছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম।যারা সন্ত্রাস করে তারা আসলে প্রকৃত ইসলামের অনুসারী নয়। ইসলাম অবশ্যই শান্তির ধর্ম। কুরান শরীফে বলা হয়েছে, “আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করে না (সূরা বাকারা)।” কিন্তু কুরান শরীফে এ কথাও বলা হয়েছে, আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ করা যাবে। বলপ্রয়োগের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ ন্যায়সঙ্গত। ভুলে গেলে চলে না, ইসলামের নবী প্রয়োজনে নিজেই অসি হাতে যুদ্ধ করেছেন। দেশ হিসেবে আফগানিস্তান কখনোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রমণ করতে যায়নি। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানকে আক্রমণ করে বসেছে। সে এই আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে জাতিসংঘের কোন অনুমোদন না নিয়েই। কোন আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা করছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর তার তল্পিবাহক গ্রেট বৃটেন।