১.
এবনে গোলাম সামাদ বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ। বিজ্ঞানী। সমাজ বিজ্ঞানী। পন্ডিত। গবেষক। শিল্পী হতে চেয়েছিলেন। হলেন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী। উদ্ভিদের রোগতত্ত্ব ও জীবাণুতত্ব বিষয়ে কিতাব লিখেছেন। উদ্ভিদ বিজ্ঞান ছাপিয়ে তিনি সমাজ-সংস্কৃতি-নৃতত্ব বিষয়ের বিশ্লেষক হয়েছেন। বিশেষজ্ঞের সম্মান ও মর্যাদা পেয়েছেন। তিনি যখন ইতিহাস নিয়ে লেখেন বা সে সম্পর্কে কথা বলেন মনে হয় তিনিই তো আমাদের ইতিহাসবিদ! ভাষা-শিল্প-শিল্পকলা নিয়েও তিনি প্রচুর লিখেছেন। শিল্পকলার ইতিহাস আর ইসলামী শিল্পকলা নিয়ে তার বই মূল্যবান। তিনি মার্কসবাদ বিষয়ে গ্রন্থ লিখেছেন। সেখানেও তার চিন্তার গভীরতা অসামান্য। ইসলাম সম্পর্কে বিভিন্ন লেখায় তিনি তার বয়ান খোলাসা করেছেন। ‘বাংলাদেশে ইসলাম’ বিষয়ে তার গ্রন্থ অনেকের ধারণা আরো পরিচ্ছন্ন করবে। দলীয় রাজনীতির সংশ্রব বিশেষ রাখেননি। তবু তিনি রাজনীতির ঘাত-প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে নিছক ‘পন্ডিত’ হতে চাননি। বাংলাদেশের গরমিলের রাজনীতি, ভূরাজনীতির টানাপোড়েন, এর জটিল আবর্তে বাংলাদেশের অবস্থা ও অবস্থান তিনি খোলাসা করেছেন।
বড় ও ছোট প্রতিবেশিদের সাথে সম্পর্কের সরল ও জটিল বহু গিঁঠ নিয়ে তিনি ইতিহাস, নৃতত্ব, ধর্ম ও রাজনীতির সংশ্লেষে বিশ্লেষণ করেছেন। সাংবাদিক না হয়েও নিয়মিত বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সাময়িকীর পাতায় নিয়মিত কলামিস্টরূপে হাজির থেকেছেন। সেখানে তার দীর্ঘ দিনের সরব উপস্থিতি তাকে আমার কাছে এক সময়ের হাবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী, মুজিবুর রহমান খান, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আবুল মনসুর আহমদ, জহুর হোসেন চৌধুরী, খন্দকার আবদুল হামিদ, আখতারুল আলমের মতো পাঠক নন্দিত সংবাদপত্রের প্রভাশালী কলাম লেখকদের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।
এবনে গোলাম সামাদের বুহুমাত্রিক সাধনা ও জ্ঞানচর্চা বিশেষায়ন যুগের কোন কম্পার্টমেন্টে বন্দী নয়। আট শতকের আবূ ইউসুফ (৭৩১-৭৯৮) থেকে মাওয়ার্দী (৯৭৪-১০৫৮),ইমাম গাযালী (১০৫৮-১১১১), নাসির উদ্দীন তুসী (১২০১-১২৭৪), ইবনে তাইমিয়া (১২৬৩-১৩২৮),ইবনে খালদুন (১৩৩২-১৪০৬), হয়ে আঠারো শতকের শাহ ওয়ালিউল্লাহ (১৭০৩-১৭৬৩) পর্যন্ত মধ্যযুগের মুসলিম জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগ-মানবেরা চিন্তার ও কর্মের, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিচিত্র শাখায় বোধের পরিস্ফূটন ও জাগরণের স্বর্ণযুগ সমাহৃত করেছেন। মনীষার নানামুখি স্ফূরণে এবনে গোলাম সামাদকে এ যুগেও সেই বহুমাত্রিক কর্মধারার যুগের প্রতিবিম্ব বলে মনে হয়ে।
তাকে অনেকে আমাদের সময়ের ইবনে খালদুন বলতে চান। আমার কাছে তা যথার্থ মনে হয়।
জীবনের দীর্ঘ সময়ের বহুবিচিত্র পথপরিক্রমায় এবনে গোলাম সামাদ অনুসন্ধানী পরিব্রাজক। অনুভবে ও অনুধ্যানে ধ্যানি চিন্তাবিদ। ফলভারসমৃদ্ধ এক মহীরুহ। দীর্ঘ জীবনের অনন্ত জিজ্ঞাসা আর বাস্তব অভিজ্ঞান সমৃদ্ধ জ্ঞানের অকৃপণ উতসমুখ যেন তিনি। জাতীয় জীবনের নানা সংকট ও বিভ্রান্তির মুখে লোলচর্ম বার্ধক্যের বাঁধ ডিঙিয়ে নবতিপর বয়সেও তিনি ছিলেন নির্ভীক কলমযোদ্ধা। পথপ্রদর্শক।
পুন্ড্র-বরিন্দ-বঙ্গ-সমতট নিয়ে শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ ( ১৩৪২-১৩৫৮) যে বাঙ্গালা ও বাঙ্গালীর জন্ম ঘোষণা করেছিলেন, সেই বাংলাদেশের একটি পল্লীমুখি এলাকায় এবনে গোলাম সামাদের জন্ম হয় স্কুল সার্টিফিকেট অনুযায়ী ২৯ ডিসেম্বর, ১৯২৯ সালে। জন্ম নিবন্ধনের বিধান তখন ছিল না। তার আসল জন্ম তারিখ সম্পর্কে তাই নিশ্চিত নই।
ঢাকা কেন্দ্রিক পূর্ব বাঙলা ও আসাম প্রদেশ বাতিলের ঘটনাপ্রবাহ তখন আমাদের কোমল জাতির সমাজদেহে গভীর ক্ষতরেখা এঁকে দিয়েছে। আর তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে উপনিবেশিকদের শোষণ-শেকলও কিছুটা আলগা হতে চলেছে।
তার জন্মের কিছু দিন আগে ঘটেছিল একটি বড় ঘটনা। নওয়াব সলীমুল্লাহ, সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী আর আবুল কাসেম ফজলুল হকেরা মিলে অনেক কাঁটাতারের বেড়া আর আঁধার পর্দা সরিয়ে পূর্ব বাঙলায় ১৯২১ সালে একটা বিশ্ববিদ্যলয় কায়েম করে ফেললেন। বাংলাদেশের কৃষক সন্তানদের জন্য তখনকার মফস্বল শহর ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সম্রাট শাহজাহানের আগ্রার তাজমহল গড়ার চেয়ে বেশি গুরুত্ববহ। আর সেই ১৯২১ সালেই কাজী নজরুল ইসলাম ‘বিদ্রোহী’ লিখে গ্রাম বাঙলার ফসলের মাঠে নতুন শিহরণ জাগিয়ে দেন।
ঢাকার বাইরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে তখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফিলিয়েশনের আওতায় আনতে দেয়া হয়নি। ফলে এবনে গোলাম সামাদের স্কুল-কলেজ ছিল ‘বৈদেশীর ফরমাশে সৌখিন ফুলের মতো বেড়ে ওঠা’ উপনিবেশিক রাজধানীর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন।
এবনে গোলাম সামাদের স্কুল শুরুর সময় ঘটলো আরো একটি বড় ঘটনা। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অধীনে ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ফজলুল হকের নেতৃত্বে কৃষক-প্রজা পার্টি ও মুসলিম লীগ মন্ত্রীসভা গঠন করলো। ফজলুল হক-নাযীমুদ্দীনদের সে মন্ত্রীসভা গঠনের ফলে পূর্ব বাঙলার কৃষক-জনতার মাঝে দেড়শ বছর পর তাদের লুন্ঠিত স্বশাসন আর ছিনতাই হওয়া জমির দলীল ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন ও আকাংখার বিস্ফোরণ ঘটলো।
এমন এক আশা জাগানিয়া সৌভাগ্যের সিঁড়ি বেয়ে এবনে গোলাম সামাদের শৈশব-কৈশোর-তারুণ্যের পথ চলা শুরু হয়। স্কুল-কলেজের তরুণদের কন্ঠে কন্ঠে তিনি শোনেন নবজারণের গান। তার কন্ঠেও তখন সুর বাজে: নারঙ্গী বনে কাঁপছে সবুজ পাতা!
এবনে গোলাম সামাদের কর্মজীবনের দিনযাপন হয়েছে রাজশাহীতে। রাজধানী থেকে দূরে থাকায় আমাদের দেশের অনেকের মনিষা সাধারণত পাদ-প্রদীপের আলো থেকে বঞ্চিত হয়। কিন্তু সারা জীবন বাধার দেয়ালভাঙা মানুষ তিনি। মফস্বল শহরের হালকা দেয়াল আর পাতলা ওড়না এবনে গোলাম সামাদের আলো আটকাতে পারেনি। তার প্রদীপ্ত মনীষার এই আলোর মিনারকে কোন পর্বতের কাছে যেতে হয়নি। পর্বত ছুটে গিয়েছে ধ্রূবজ্যোতির কাছে। সব দূরত্ব ভেদ করে তিনি আপন বিভায় জাতীয় মানসকে আলোকিত করেছেন।
এবনে গোলাম সামাদের বেলায় আরো একটি বৈশিষ্ট্য দেখি। উপনিবেশিক যমানা থেকে ‘আলিম’ ও ‘জ্ঞানী’র মাঝে ভাব ও মেজাযগত একটা আলাদা কৃত্রিম অবয়ব তৈরি করা হয়েছে। যুগের ভ্রূ-কুঁচকানোর পরওয়া না করে এবনে গোলাম সামাদ সে কৃত্রিম দেয়াল ছিন্ন করেছেন। তার কল্যানচিন্তায় সকলকে অবগাহিত করতে তাই তার দান সার্বজনীন হয়েছে।
২.
গত আধা শতকের বেশি সময় তাকে একজন প্রধান চিন্তাবিদ হিসাবে জেনেছি। মৃদু ও কোমলভাষী। কিন্তু তেজস্বী। গভীর প্রভাব-বিস্তারক।
আমাদের কালের প্রচলিত বহু মিথ ও ধারণা আর ভ্রান্তি ও বিভ্রান্তির জাল তিনি ছিন্ন করেছেন। ভেজাল তথ্যের জঙ্গল সাফ করে আগাছা কেটে বাগান সাজিয়েছেন। আমাদের জাতিসত্তা ও আত্মপরিচয় নিয়ে গত কয়েক দশকের বহু মতলবি প্রচারণার শেকড় উপড়াতে তার তুলনা এ সময়ে নযীরহীন।
যে পন্ডিতেরা বুঝেও নানা কারণে সত্য উচ্চারণে কুন্ঠিত, কিংবা সত্যের প্রশ্নে আপোসের পথ-হাঁটা যারা সুবিধার মনে করেন, তারা এ জাতির অবিস্মরনীয় জ্ঞানী ব্যক্তিদের ঐতিহ্যের অনুসারী নন। এবনে গোলাম সামাদ সুবিধাবাদকে সব সময় জাতীয় কর্তব্যের খেলাফ বিবেচনা করেছেন। জাতির সাংস্কৃতিক সীমানা অনিরাপদ করার নানা প্রয়াসের কাছে সমর্পিত আত্মবোধবিমুখ মানুষ সমর্পিতদের সাথে এবনে গোলাম সামাদের অবস্থান ছিল সব সময় বিপরীত মেরুতে।
জাতির সাংস্কৃতিক সীমানা অনিরাপদ করার যে কোন আলামত তার দেশপ্রেমী চৈতন্যের শক্তিশালী রাডারে সহজে ধরা পড়ে। তিনি সে সব বিষয়ে সতর্ক ও জাগ্রত করেন তার জাতিকে। একজন সৎ বুদ্ধীজীবীর কর্তব্যবোধের গভীর অনুভূতি নিয়ে তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন ; যুগের হাওয়ার তোয়াক্কা না করে।
সত্তরের দশকের শুরুতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি অংশ নেন। যুদ্ধের সময়ও তিনি দেশপ্রেমিকের দরদ, তীক্ষ্ণ সজাগতা আর অভিজ্ঞতার অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে সকল দৃষ্টিকোণ আর দৃষ্টিভঙ্গী নজরে রাখেন। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর জাতীয় রাজনীতি, সাংস্কৃতিক সীমানা, ভূরাজনৈতিক স্বার্থ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নে তিনি অসংকোচ সাহসে সোচ্চার হয়েছেন।
উনিশশ পঁচাত্তর সালের এপ্রিলের ফারাক্কার ‘উৎসর্গ ’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচমন্ত্রী দাওয়াত পেয়েছিলেন। যাননি। অসুস্থ ছিলেন। শুরু থেকেই বাংলাদেশের মানুষ ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। পঁচাত্তরে এ বাঁধ খুলে দিলে তার সর্বনাশা প্রতিক্রিয়ায় পদ্মা নদী শুকিয়ে যায়। তখনও প্রতিবাদ ওঠে। ছিয়াত্তরের মে মাসে ‘দৈনিক আজাদ’-এ ক’টি সরেযমিন সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়। এর পর দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক বাংলায় এ নিয়ে রিপোর্ট বেরোয়। নভেম্বরে মওলানা ভাসানী ফারাক্কামুখি লংমার্চ করেন। এবনে গোলাম সামাদও সে সকল প্রতিবাদের মিছিলে সোচ্চার ছিলেন।
এবনে গোলাম সামাদ ছিলেন আমাদের জাতীয় আকাংখার কন্ঠস্বর। জাতীয় গন্তব্যের দিক নির্দেশক। চেতনার বাতিঘর। তিনি ছিলেন আমাদের অরক্ষিত সাংস্কৃতিক সীমানার এ সময়ের পাহারাদার। সিপাহসালার।
জনগণের সকল স্বার্থ ও অধিকার প্রশ্নে তার জাগ্রত বিবেক সব সময় সোচ্চার থেকেছে। স্বাধীন জাতির মাথা উঁচু, মেরুদন্ড খাড়া পররাষ্ট্রনীতির বলিষ্ঠ সোচ্চার প্রবক্তা এবনে গোলাম সামাদ জাতীয় স্বার্থ ও মর্যাদার প্রশ্নে সকল সংকটের সড়কে জাতিকে হুশিয়ার করেছেন। তার নির্মোহ তত্ব-তথ্য-যুক্তির চৌম্বক টানে আত্মবোধবিমুখ বহু মানুষ সম্বিত পেয়ে ঘুরে দাঁড়িয়াছেন।
৩
এবনে গোলাম সামাদকে গত দুই দশক ধরে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিছুটা ঘনিষ্টভাবে দেখার ও জানার সুযোগ পেয়েছি। প্রথম বার তার সাথে একমঞ্চে বসার সুযোগ পাই ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সেমিনারে। তিনি রাজশাহী থেকে সে অনুষ্ঠানে এসেছেন। সেমিনারের সভাপতি ছিলেন ঢাকায় মোগল রাজধানীর স্থপতি ইসলাম খানের নামে প্রতিষ্ঠিত ইসলামপুরের ইসলামিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মওলানা আমীনুল ইসলাম। সেমিনারে তখনকার নবীন এ লেখকের জাতিসত্তা বিষয়ক দীর্ঘ প্রবন্ধের পর সে সময়ের সত্তরোর্ধ প্রবীন এবনে গোলাম সামাদ ছোট্ট একটি নিবন্ধ পাঠ করলেন। মনে হলো অল্প ক’টি বাক্যে তিনি যা বলেছেন সে তুলনায় আমি কত কম জানি!
জীবনের শেষ সময়েে নবতিপর বয়সেও তার বড় দুশ্চিন্তা ছিল আমাদের কোমল জাতির সাংস্কৃতিক সীমানার হেফাজত নিয়ে। বয়সের ক্লান্তিকর সীমাবদ্ধতা তুচ্ছ করে অরক্ষিত সাংস্কৃতিক সীমানার পাহারাদাররূপে তিনি যুদ্ধের মাঠে সদা জাগ্রত ছিলেন। এবনে গোলাম সামাদ তার কলিজার ঘামের কালী দিয়ে প্রতি মুহূর্তে দেশপ্রেমের দায় শোধ করেছেন।
এ ভাবে তিনি আমাদেরকে পনেরো শতকের নূর কুতুবুল আলম, ষোল ও সতেরো শতকের শায়খ আহমদ সরহিন্দী, আঠারো শতকের ফকীর মজনু শাহ (১৭৬৩-১৭৭৭), উনিশ শতকের মুহাজের হাজী শরীয়তউল্লাহ (১৮১৮-১৮৪০) ও মীর নেসার আলী তিতুমীর (১৮২১-১৮৩১) আর বিশ শতকের সেই সব মনীষীদের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন যারা জাতির ক্রান্তিকালীন সাংস্কৃতিক প্রতিরক্ষার লড়াইগুলিতে সামর্থের সবটুকু নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তার সে প্রেরণায় এই পবিত্র যমিনের সাংস্কৃতিক সীমানার মুহাফেজ হিসাবে হাজারো তীরন্দাজ কাজ করবেন। তার জীবনের লড়াই আমাদের জাতির সাংস্কৃতিক সীমানা হেফাজতে আগামির প্রেরণা হবে। তিনি বেঁচে থাকবেন প্রেরণার মশাল ও গন্তব্যের বাতিঘর হয়ে। এমন আত্মত্যাগী দেশ ও জাতির দরদি দরবেশ সব সমাজেই খুব কম জন্ম নেন।
*
এবনে গোলাম সামাদকে নিয়ে একটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হবে। উদ্যোক্তাগণ আমার কাছে লেখা চেয়েছেেন। শাহাদাত সরকার তাগাদা দিচ্ছিলেন। আমিও প্রবাসের নানা সীমাবদ্ধতার মাঝে লেখাটি শেষ করতে রাত জাগছিলাম। লিখতে লিখতে শেষ রাতে চোখ বন্ধ করেছি। মাকসুদা ফজরের নামাজের জন্য ডাকলেন। নামাজের বিছানাতেই জানালেন খবর। আমার লেখা শেষ করার আগেই এবনে গোলাম সামাদ রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার জন্য দোয়া করলাম। বেশি দোয়া করলাম নিজেদের জন্য। আমাদের জাতি যে আজ সত্যি এতিম হয়ে গেল! এখন আমাদেরকে ডেকে ডেকে কে বলবেন: জাগো সবাই, কোণ্ঠে বাহে !!
লিখেছেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক সিইও মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, লেখাটি প্রকাশিত হয় তার ফেসবুক প্রোফাইলে ১৫ আগষ্ট, ২০২১ এ।